গণেশ চতুর্থী হল ভগবান গণেশের জন্মবার্ষিকীর পবিত্র উৎসব। এই দিনে গণপতির পূজা করলে সুখ, সমৃদ্ধি এবং জ্ঞান আসে। কিন্তু পূজার কিছু ভুল আপনার প্রচেষ্টার ফল কমিয়ে দিতে পারে। বাস্তু এবং ধর্মীয় নিয়ম মেনে পূজাকে কার্যকর করুন। আসুন জেনে নিই, গণেশ চতুর্থীতে কোন ৭টি ভুল এড়ানো উচিত।
1.ভুল দিকে মূর্তি স্থাপন করবেন না
গণেশের মূর্তি ভুল দিকে স্থাপন করলে পূজার সুফল হ্রাস পায়। বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে মূর্তি স্থাপন করুন। দক্ষিণ দিকে মূর্তি স্থাপন করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি অশুভ বলে বিবেচিত হয়। সঠিক দিক থেকে ইতিবাচক শক্তি সঞ্চারিত হয়।
2.ভাঙা বা ক্ষতিগ্রস্ত মূর্তি পূজা করবেন না
গণেশ চতুর্থীতে ভাঙা বা ক্ষতিগ্রস্ত মূর্তি পূজা করা অশুভ বলে মনে করা হয়। এই ধরনের মূর্তি নেতিবাচক শক্তি আকর্ষণ করে। সর্বদা সঠিক আকার এবং সুন্দর মূর্তি নির্বাচন করুন। পূজার আগে মূর্তিটি পরীক্ষা করে দেখুন এবং নিশ্চিত করুন যে এটি নিখুঁত অবস্থায় আছে।
3.চন্দ্র দর্শন এড়িয়ে চলুন
গণেশ চতুর্থীতে চাঁদের দিকে তাকানো নিষিদ্ধ কারণ এটি মিথ্য দোষের দিকে পরিচালিত করে। কিংবদন্তি অনুসারে, চাঁদ গণেশকে উপহাস করেছিল, যার ফলে এই নিয়মটি তৈরি হয়েছিল। যদি আপনি ভুলবশত চাঁদ দেখতে পান, তাহলে ‘ওঁ গণ গণপতয়ে নমঃ’ মন্ত্রটি জপ করুন।
4.ভুল প্রসাদ নিবেদন
গণেশকে মাংস, মাছ বা রসুন ও পেঁয়াজযুক্ত খাবারের মতো আমিষ খাবার নিবেদন করবেন না। গণেশ মোদক, লাড্ডু এবং ফল পছন্দ করেন। তুলসী পাতা ব্যবহার করবেন না কারণ এটি গণেশকে নিবেদন করা হয় না। সাত্ত্বিক নৈবেদ্য পূজার ফল বৃদ্ধি করে।
5.পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবহেলা করবেন না
গণেশ চতুর্থীতে পূজাস্থলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশেষ যত্ন নিন। নোংরা বা অপরিচ্ছন্ন পূজাস্থল নেতিবাচক শক্তি আকর্ষণ করে। মূর্তি স্থাপনের আগে, গঙ্গাজল দিয়ে স্থানটি পবিত্র করুন। ফুল, প্রদীপ এবং ধূপকাঠি সঠিকভাবে সাজান যাতে পূজার প্রভাব বৃদ্ধি পায়।
6.শোবার ঘরে মূর্তি রাখবেন না
শোবার ঘরে গণেশ মূর্তি রাখলে বাস্তু দোষ তৈরি হয়। এটি মানসিক চাপ এবং অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। পূজা কক্ষে, বসার ঘরে অথবা প্রধান দরজার কাছে মূর্তি স্থাপন করুন। এই স্থানটি ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পূজার শুভ ফল দেয়। শোবার ঘরে পূজার সামগ্রী রাখা এড়িয়ে চলুন।
7.ভুল সময়ে পূজা করবেন না
গণেশ চতুর্থীতে, পূজা এবং প্রতিমা স্থাপন শুভ মুহুর্তে করা উচিত। সকালের সময় অথবা পঞ্চাঙ্গ অনুসারে নির্ধারিত সময়ই সর্বোত্তম। রাতে প্রতিমা স্থাপন বা পূজা এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি অশুভ বলে বিবেচিত হয়। শুভ মুহুর্তে পূজা করলে গণপতির আশীর্বাদ এবং কাজে সাফল্য আসে।
শ্রদ্ধার সাথে প্রতিমা বিসর্জন দিন
গণেশ চতুর্থীর পরে, শ্রদ্ধার সাথে প্রতিমা বিসর্জন দিন। প্রতিমাটি নোংরা জলে বা ডাস্টবিনে ফেলবেন না। নদী বা সমুদ্রে ভাসিয়ে দিন অথবা মন্দিরে তুলে দিন। বিসর্জনের সময় ‘ওঁ গণ গণপত্যে নমঃ’ মন্ত্রটি জপ করুন। শ্রদ্ধার সাথে বিসর্জন দিলে পূজার পূর্ণ সুফল পাওয়া যায়।
